- লাভলু পাল চৌধুরী
১৭৫০ এর পর থেকে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইড সহ অন্যান্য তাপ শোষণকারী গ্যাসের ঘনত্ব বেড়েছে এতে করে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। পরিবর্তিত ধারায় জলবায়ুর অস্থির আচরণে এর অভিঘাত হচ্ছে নানামুখী ও সুদূর প্রসারী। জাতিসংঘের অধীন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্ত-রাষ্ট্রীয় প্যানেলের (আই পিসিসি) প্রতিবেদন মতে- বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোই এই অভিঘাতের শিকার হবে বেশী। আর বিশ্ব ব্যাংকের মতে- দরিদ্র দেশের মধ্যে বাংলাদেশ হবে অন্যতম শিকার। মানব সভ্যতা বিকাশের আদি ও প্রথম পেশাবৃত্তিই ছিল কৃষি। সেই উত্তরাধিকারের প্রকৃতি নির্ভর কৃষিই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থা অনেকাংশে জলবায়ুর উপরই নির্ভরশীল। জলবায়ুর বিরূপ আচরণে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি সংশ্লিষ্ট কৃষকরা ধৈর্য্য ও সহনশীলতার সাথে লড়াই-সংগ্রাম করে টিকে আসছিল। কিন্তু এমন কোন প্রযুক্তি বা প্রস্তুতি কৃষকের আগেও ছিল না এখনও হয়নি যা দিয়ে জলবায়ুর বৈরীতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে। উপরক্ত দিন দিন জলবায়ুর বিরূপতা তুলনায় ক্রমসূচক আশংকাজনক ভাবে উর্ধ্বমূখী হচ্ছে। সমস্ত মনযোগের কেন্দ্র ও আশংকা এখানেই।
প্রশ্নের স্বাভাবিকতা মনুষ্য সৃষ্ট মূলত জীবাশ্ম জ্বালানীর দহনের ফলে (বিশেষত: শিল্প-কারখানা) জলবায়ুকে ক্ষেপিয়ে তোলায় তার ক্ষিপ্ত ছোবলে বিষদাঁত কোথায় ফুটবে। আবহাওয়াগত চরম পরিস্থিতি ও আপদের ফলাফল কি দাঁড়ায়। মূলত: আবহাওয়ার আচরণে স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলে। অস্বাভাবিক, অস্থির, বিরূপ আচরণ শুরু করে। এই যে স্বাভাবিকের বদলে বৈরীতা শুরু করে; এতে করে দেখা দেয় বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, শৈত্যপ্রবাহ, দাবদাহ। আর এর অভিঘাতের ফলে কৃষি সেক্টরে নেমে আসে বিপর্যয়।
বাংলাদেশ উত্তর ও পশ্চিমে ভারত এবং পূর্বে মায়ানমার ও ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত। দক্ষিণে এর বিস্তৃতি বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। প্রধানত
একটি নিম্ন পাললিক সমতলীয় ব-দ্বীপ অঞ্চল। যার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্ণফূলীর মত বড় নদী। দেশব্যাপী রয়েছে নদ-নদী ও খালবিলের সমাহার। বিশ্বের অপরাপর দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থা এমন যে, তা যেমন কৃষি উপযোগের দিক থেকে অন্যতম তেমনি জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের দিক থেকেও তিগ্রস্ততার শীর্ষে। খরা : ২ হাজার ৫’শ বিজ্ঞানীর দেয়া আইপিসিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয় ১.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বিশ্বের শুষ্কভাবাপন্ন এলাকাগুলো চাষের অযোগ্য হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে কৃষি আবাদে নেমে আসবে বিপর্যয়। তাপমাত্রার বৃদ্ধিতে শীত মওসুমের কৃষি উপযোগী যতটুকু বৃষ্টিপাত হতো এর পরিমান আরও নিম্নমূখীতো হবেই; বিপরীতে বায়ুমণ্ডল তুলনায় হবে আরও উষ্ণ। এর প্রভাবে খরার মুখোমুখিতে রবি মওসুমে বৃহত্তর রাজশাহী, কুষ্টিয়া অঞ্চলে পড়বে নেতিবাচক প্রভাব। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিম্নমূখীতায় ধাবিত হবে। তাতে সেচের পাম্পগুলো ক্রমশ অকার্যকর হতে থাকবে। প্রান্তিক চাষীদের আবাদ অসম্ভব পর্যায়ে ঠেকবে। অপরদিকে দণি-পশ্চিম অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার নদীগুলোতে লবণাক্ততা বাড়তে থাকবে। এর প্রভাবে ক্রমশ উজানের দিকে লবণাক্ততার গ্রাস ছড়াতে থাকবে। ফলে শুকনো মওসুমের কৃষিতে কুপ্রভাব পড়ার কারণে কৃষি ও কৃষিজীবীরা এর শিকার হবে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সুন্দরবনের মাটিতে লবণাক্ততার পরিমান ৯ থেকে ১০ হাজার মিলিমোস। এই পরিমাণকে তাঁরা মাত্রাতিরিক্ত বলে উল্লেখ করেছেন। অতিরিক্ত লবণাক্ততার ফলে সুন্দরবনের গাছগুলোর প্রস্বেদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে এবং এ কারণে গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধি হবে না।
মেঘবিহীন আকাশের কারণে প্রখর সূর্যতাপ ভূ-পৃষ্ঠে এসে পড়ে সরাসরি। ওই সময় প্রায়শ: সাগরের লঘুচাপের প্রতিক্রিয়ায় প্রবাহিত বাতাস সাগরে ঘনীভূত হয়। এতে করে দাবদাহ শুরু হয়। দাবদাহের গরম প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। কৃষকরা বোরো ধান কেটে এনে উঠোনে স্তুপ করে রাস্তার পর মেলে দেওয়ার আগেই প্রচন্ড গরমে তা পঁচে যায়। এমনও হচ্ছে এ স্তুপ থেকে নতুন করে ধানের অঙ্কুরোদগম হয়। কৃষক সম্মুখীন হচ্ছে যথেষ্ট পরিমানে ক্ষতির। এই ক্ষতির পরিমান দিন দিন বাড়বে। প্রচন্ড গরমে মুরগীর খামারে ধ্বস নামে। ২০০২ সনে দেশের দক্ষিণে-পশ্চিমাঞ্চলে প্রচণ্ড গরমে প্রায় ২ লাখ মুরগী মারা যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রানুযায়ী বৃহত্তর ময়মনসিংহের পূর্বাঞ্চল ও বৃহত্তর সিলেটের পশ্চিমাংশের হাওর প্রভাবিত এলাকাকে দেশের এক চতুর্থাংশ দাবি করা হয়েছে। একুশ শতকের হাওর এলাকা কৃষি উৎপাদনের উৎকৃষ্ট অঞ্চল হিসেবেও খ্যাত। দেশের খাদ্য যোগানদাতা হিসেবে এ হাওর এলাকা রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। উপমহাদেশের প্রথম গভীর পানির ধান গবেষণা কেন্দ্র এখানেই স্থাপিত হয় ১৯৩৪ সনে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। এর বিজ্ঞানীরা জলবায়ুর অস্থির আচরণকে দায়ী করে বলেছেন, যে গভীরতাকে মাথায় রেখে গবেষণা করা হয় সেই গভীরতা সেই বছর থাকে না। এতে করে মাঠ পর্যায়ে গবেষণাগুলো তেমন সাফল্য আনতে পারে না। কৃষি নির্ভর অর্থনীতির এই হাওর জলাভূমির দেশ ভাটিতেও এখন বিরাজ করে খরা। সেচের জন্য পানি নেই, হেক্টরের পর হেক্টর জমি খরার পানি শূণ্যতায় অনাবাদিই থাকছে। জলবায়ু জনিত পরিবর্তনে বর্ষাকালে উজানের স্রোতে পাহাড়ি বালিতে সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই, মনু, কালনী, পিয়াইল নদী শুকিয়ে যাচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। পাহাড়ি বালির চর হাওর এলাকার কৃষি প্রতিবেশ বদলে দিচ্ছে। এ ভাবেই হাওর এলাকায় খরা জলাবদ্ধতা চর তৈরি হয়ে জন জীবন সহ প্রকৃতিতে অসহনীয় অবস্থা সৃষ্টি করছে।
বন্যা : ভৌগোলিক সূত্রে বন্যা বাংলাদেশের অবশ্যাম্ভাবী বিপর্যয়। আর এ বিপর্যয় সবচেয়ে বেশী নেমে আসে কৃষিখাতে। এর পরেও কৃষির আধুনিকায়ন, কৃষক ও কৃষি বিজ্ঞানীদের যৌথ সংগ্রাম করে কৃষি ও কৃষি ভিত্তিক জীবিকা টিকে রয়েছে। দুর্যোগ ও দুঃশাসনকে মোকাবেলা করে এগিয়েছে আমাদের দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। কৃষি বিষয়ক সংস্থাগুলোর সূত্রে এখনও দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ কৃষি নির্ভর। কিন্তু জলবায়ুর রুক্ষ আচরণে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে; ‘গোলা ভরা ধান আর গোয়াল ভরা গরু’ পঙতির এই বাংলাদেশ।
১৭৮৭ সালের বন্যার পর ১৮৪২ সালে আবার বন্যা হয়। এর পরে ১৮৫৮, ১৮৭১, ১৮৭৫, ১৮৮৫, ১৮৯২, ১৯৩১, ১৯৫৪, ১৯৫৫, ১৯৫৬, ১৯৬২, ১৯৬৪, ১৯৬৮, ১৯৭০, ১৯৭৪, ১৯৭৮, ১৯৮৪, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৮৮, ২০০০ সালের পর ২০০৪ সালের বন্যার ব্যাপকতা ছিল বেশী। ১৯৫৬ সনে জাতিসংঘের জুলিয়ান ক্রগ, ১৯৬৩ সনে জেনারেল হার্ডিন, ১৯৬৪ সনে অধ্যাপক থাইসিও পৃথক পৃথক প্রতিবেদনে এ দেশের বন্যা সমস্যাকে ‘পৃথিবীর জটিলতা’ বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের নদী প্রণালী এক জটিল জাল; দেশব্যাপী বহুমাত্রিক জল-সার্কিট তৈরি করেছে। যা পৃথিবীর অন্যান্য নদী প্রণালীর সাথে কোন মিল নেই।
বিগত ৫০ বছরের বড় আকারের বন্যার প্রকোপ বিশ্লেষণে যে ফলাফল দাড়ায় তা উদ্বেগজনক। দিন দিন কমে আসছে দুইটি বন্যার সময়ের ফারাক। ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই সামনে হাজির হচ্ছে আর একটি বন্যা। তাও আবার কৃষকের ‘গোদের উপর বিষফোড়া’র মত দেখা দেয় আগাম বন্যা। ১৯৯৮ সাল থেকে আগাম বন্যার প্রবণতা লণীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়। ১৯৬২ সনে বন্যায় দেশের ৩৭৩৯৫ বর্গ কিঃমিঃ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৬৩ সনে ৪২৯৯২ বর্গ কিঃমিঃ, ১৯৬৯ সনে ৪১৪৩৮ বর্গ কিঃমিঃ, ১৯৭০ সনে ৪২৪৭৪ বর্গ কিঃমিঃ, ১৯৭১ সনে ৩৬৩৩৪ বর্গ কিঃমিঃ, ১৯৭৪ সনে ৫২৫১৫ বর্গ কিঃমিঃ, ১৯৮৭ সনে ৫৭২৬৮ বর্গ কিঃমিঃ এবং ১৯৮৮ সনে ৮৯৯৭০ বর্গ কিঃমিঃ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হচ্ছে, দিন দিন দুর্যোগের শিকারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বাড়ছে; বাড়ছে কৃষি খাতে বিপর্যয়, অভিঘাত। প্লাবনের দাপটে নদী ভাঙ্গনের চিত্র ভয়াবহ। পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিশ্ব ব্যাংক, ইউএসএইড সহ বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রতিবছর ২৫ হাজার একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বিপরীতে নদী থেকে চর সহ মাত্র আড়াই হাজার একর জমি জেগে উঠছে। ওই সমীক্ষায় আরো জানা গেছে, গত ৩০ বছরে নদী গ্রাসে সব হারিয়ে ২৫ লাখ মানুষ ভূমিহীন হয়েছে।
২০০২ সনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিসংখ্যান মতে- মাঝারি আকারের বন্যায় ২০০ কোটি টাকার ফসল হানি হয়। প্লাবনে ৩৫ জেলায় প্রায় ১ ল ৪ হাজার ৩শ ৮১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। সরকারি সূত্র মতে- ২০০৪ সালে বন্যায় ৪৪ জেলার ৩০০ উপজেলার ৮ লাখ ৫১ হাজার ১শ ১৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। এতে তিগ্রস্ত হয় ৪৮ লাখ ৮৪ হাজার কৃষক পরিবার। বন্যার পর বন্যায় কৃষি জমিতে বালির স্তর পরে জমির উর্বরতা দিন দিন হ্রাস পেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কপালে দুঃচিন্তার ভাঁজ পড়ছে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টদের।
শৈত্যপ্রবাহ : বিশিষ্ট পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, ‘গত ১৯০১ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে আধা ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১৯৯০ থেকে ২০০০ এই ১০ বছরে বেড়েছে আরও আধা ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অস্বাভাবিকতার কারণ অস্বাভাবিক শৈত্যপ্রবাহ। ভবিষ্যতে দুর্যোগের মাত্রা আরো বাড়বে। এই শৈত্যপ্রবাহ কৃষিতে ব্যাপক কূ-প্রভাব ফেলছে।
শৈত্যপ্রবাহ ও অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারণে ইরি-বোরো চাষাবাদে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র মতে- ২০০২ সনে এক মিলিয়ন টন বোরো ধান কম উৎপাদন হয়। একমাস কর্মহীনতায় কাটায় প্রায় ২০ ল কৃষি শ্রমিক। দেশের উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের ১৮ জেলায় প্রায় ২০০ মিলিয়ন টাকার ১৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো বীজতলা এবং গোল আলু ও সরষে বিনষ্ট হয়। তীব্র শীতে প্রচুর উপকারী পোকা-মাকড় এবং মৌমাছি মারা যায়।
টর্নেডো : জলাবায়ুর চরম অস্থিরতায় বৈরীতার ফল টর্নেডো, কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি। মুহুর্তে তছনছ করে দেয় কৃষকের সব স্বপ্ন। লন্ডভন্ড হয়ে যায় কৃষি। শুধুমাত্র ২০০২ সালে ১১৫ উপজেলার প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয় টর্নেডো, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে। একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মাত্র ১ মিনিটের টর্নেডোতে বগুড়া জেলায় ৭টি ইউনিয়নের ২৫ গ্রাম বিধ্বস্ত সহ মৌসুমী শাক-সবজি ও অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
জলবায়ুর বিরূপতা এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে, কৃষক গোলায় ধান তুলবে, ফসলাদি ঘরে আনবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই। এর সর্বগ্রাসি প্রভাব পড়বে কৃষি উৎপাদনে, কৃষি পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় মূল্যে, কৃষিতে নিয়োজিত মানুষের জীবিকায়। বাড়বে জলবায়ু তাড়িত বেকারত্ব এবং দারিদ্র্যতা। মানুষের আর্থ-সামাজিক বিকাশ কমতে থাকবে। গৃহস্থালির শুভ সূচকের সাথে জড়িয়ে আছে নারী। জলবায়ুর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রধানত খরগ নেমে আসে সেই নারীর উপরেই। এরই প্রভাবে গৃহস্থালিতে যে বিপর্যস্ততা চলতে থাকে তা সার্বিক ভাবে স্বাভাবিক কৃষি ব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। শতাব্দি জুড়ে কৃষির ইতিহাস প্রকৃতির সাথে সংশ্লিষ্টতার ইতিহাস। দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ দেখে কৃষক স্বপ্ন বুনে। সেই স্বপ্ন ফ্যাকাসে হতে খুব বেশি সময় লাগে না, মাত্র একটি দিন বা রাত। বন্যা, খরা, শৈত্যপ্রবাহ, ঘুর্ণিঝড়, টর্নেডো সহ নানাবিধ জলবায়ুর বৈরীতা কৃষি ও কৃষককে নিঃশেষ করতে উদ্বত হয়েছে। বিষয়টি এখন বাস্তবতা এবং শুধুই বাস্তবতা।
প্রতিবেদন : লাভলু পাল চৌধুরী
মোবাইল : ০১৭৫৫৫৩৭৩৬৫
১৫ মার্চ ২০১০ ইং
১৫ মার্চ ২০১০ ইং